আপনার ঘুম ভাঙ্গল টুই টুই শব্দে। চোখ মেলে দেখলেন আপনার ডান পাশে জানালাতে চড়ুই পাখি টুই টুই করে ডাকছে। আপনার মন ভরে গেল। ভাবলেন এইটার একটা ছবি তোলা দরকার। পাখী আপনাকে জাগিয়ে দিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলো। চড়ুই পাখীর সাইজ এটুকুন ৩ কি ৪ ইঞ্চি হবে আপনার হাতের তালুর অর্ধেক এটুকু সাইজকে কিভাবে ক্যামেরা বন্দী করবেন। আপনার মাথা হঠাৎ বুদ্ধি এলো ম্যাগনিফাইন গ্লাসের মতন দেখতে বড় করে দিলে পাখীটা বড় লাগবে। কিন্তু ক্যামেরাতে তো ম্যাগনেফাইন গ্লাস লাগানো জায়গা নাই। আবার আপনার মন খারাপ হলো। হঠাৎ আপনি ঠিক করলেন হিসাব নিকাশ করতে হবে কত বড় তুলবেন ধরেন ৩২ মি.মি ক্রপের হিসাবে বা ৫০ মি.মি ফুল ফ্রেমের হিসাবে স্বাভাবিক দেখতে পাচ্ছেন। মানে ওই পাখীটা ৩ কি ৪ ইঞ্চি দেখতে পাচ্ছেন এতে কোন লাভ হলো না। আপনি রাগে দুঃখে ১৮-৫৫ জাতীয় লেন্স খুলে ফেললেন। অনেক গরম পড়েছে তাই আপনার মাথা আরো গরম হয়ে গেছে। পরে আপনি ঠান্ডা পানি খেলেন ঠান্ডা হয়ে ভাবলেন, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। আবার ভাবতে লাগলেন কি করা যায়। হঠাৎ আপনার মাথায় আসলো ফোকাল লেংথ যদি বাড়ে তাহলে পাখী আরো কাছে চলে আসবে যাকে বলে জুম ইন। আপনি ঠিক করলেন আপনার প্রিয় পাখীলেন্স মানে ৫৫-২৫০ মি.মি আপনার ক্রপ বডিতে লাগালেন। ২৫০ মি.মি এ রাখার সাথে সাথে আপনার মন ভালো হয়ে গেল। আপনি চড়ুই পাখীটার মনের মতন ছবি পেয়ে গেলেন। ফোকাল লেংথ বড় হওয়ার জন্যে বারান্দার ওপাশে থাকা বাড়ীঘরগুলো ঘোলা হয়ে গেল আপনি স্পষ্ট আপনার পাখীকে ক্যামেরা বন্দী করে ফেললেন। খুশী হয়ে আপনি ফেইসবুকে দিয়ে দিলেন অনেক লাইক পেয়ে গেলেন। আপনি মুচকি হাসি দিয়ে ভাব নিলেন। হে: হে:। তবে সত্যিকার অর্থে পাখীগ্রাফি, জঙ্গলীগ্রাফি এতটা সহজ নয়। যারা সত্যিকার অর্থে ওয়াইল্ড লাইফ নিয়ে কাজ করেন তাদেরকে দিনের পর দিন জঙ্গলে তাবু টাঙ্গিয়ে থাকতে হয়। তারপর পাখীর জীবনযাত্রার উপর রিসার্চ করে ছবি তুলতে হয়। আমার এই গল্পটা শুধুমাত্র নতুন ফটোগ্রাফারদের জন্যে যারা পুরাতন ফটোগ্রাফার তারা অনেক বেশী টেকনিক খাটিয়ে আরো ভালো বুদ্ধি বের করে পাখীগ্রাফি করতে পারেন।
আজকের লেন্সগল্প : ৪ পাখী লেন্স বা জঙ্গলী লেন্স বা টেলি লেন্স – অয়ন আহমেদ
- আজকের লেন্সগল্প : ৩ সুন্দরী লেন্স বা পোট্রেট লেন্স – অয়ন আহমেদ
- আজকের লেন্সগল্প (৬) : পোকাপুকি ওরফে ম্যাক্রু লেন্স – কুতুব উদ্দীন