ফটোগ্রাফিতে যারা ইতোমধ্যেই বেসিক কোর্স সমাপ্ত করেছেন, তাদের প্রায় প্রত্যেকেই ছবির বিভিন্ন ফ্রেম ফরমেটগুলো (৩:২, ৪:৩, ৭:৬, ১:১/৬:৬, ৫:৪, ১৬:৯, ১২:৬/২:১) সম্পর্কে আইডিয়া পেয়ে গেছেন নিশ্চয়ই।খুব সহজভাবে বলতে হলে, আপনি যে ছবি তুলছেন, তার প্রস্থ ও দৈর্ঘ্যের আনুপাতিক মাপকে ফ্রেম ফরমেট বলা যায়। তো বর্তমানে এর মধ্যে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় ফরমেটটি হচ্ছে ৩:২, যা আমাদের কাছে ৩৫ এমএম ফ্রেম ফরমেট নামে বেশি পরিচিত। ফিল্ম বা ডিজিটাল প্রযুক্তিতে এর পরিমাপ ২৪x৩৬ মিলিমিটার। ‘ফুল ফ্রেম’ বলেও অনেকে চিনে এই ফরমেটকে।
ফটোগ্রাফির ইতিহাসে ৩৫ এমএম ফরমেটের প্রথম প্রচলন ঘটে ১৯২০ সালে, জনপ্রিয় কোম্পানি ‘লাইকা’ ক্যামেরার মাধ্যমে যার নেপথ্যে ছিলেন জার্মান অপটিকাল ইঞ্জিনিয়ার Oskar Barnack। এজন্যে অনেকেই তখন এটাকে ‘লাইকা’ বা ‘Barnack’ ফরমেটও বলতো।
Oskar Barnack কেন এই ফরমেটের প্রচলন করেছিলেন তার সঠিক কোন কারন বা ব্যাখ্যা খুজে পাওয়া যায়নি। তবে গ্রীক গণিতবিদ্যার ‘Dimensions of the Golden rectangle (1.618:1 aspect ratio)’ থিওরির সাথে এর পুরোপুরি মিল পাওয়া যায়। বলা হয়ে থাকে, এই অনুপাতের সকল শিল্পকর্মগুলোর নান্দনিকতা বা দৃশ্যপট খুব উপভোগ্য।
আর সবচে মজার ব্যাপার হচ্ছে বহুল পরিচিত, জনপ্রিয় কম্পোজিশনগুলোর মধ্যে ‘রুল অব থার্ডস’ নিয়মটি ‘Golden rectangle’ থিওরির একটি আদর্শ উপযোগ।।
স্ট্রীট ও কেন্ডিড ফটোগ্রাফির জনক, ফ্রান্সের বিখ্যাত ফটোগ্রাফার Henri Cartier-Bresson এর হাত ধরেই এই ফরমেট সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
তবে এই ফ্রেম ফরমেটের একটি নেতিবাচক দিকও রয়েছে। ল্যান্ডস্কেপ ফরমেটে ছবির শিল্পমান খুব ভাল হলেও প্রোট্রেইট ফরমেটে ছবি তুলতে গেলে ফ্রেমে অনেক নেগেটিভ স্পেস থেকে যায়। ফলে ছবির কম্পোজিশন বিসদৃশ হয়ে পড়ার সুযোগ থাকে। আর তাই এই ফরমেটে ছবিকে অর্থপূর্ণ করে তুলতে আমাদের জিয়োমেট্রিক, সিমেট্রিক, শেপ্স, লিডিং লাইন ইত্যাদি বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হয়।
আজ এ পর্যন্তই থাকুক, আশা করি পরবর্তী পর্বে এগুলো নিয়ে বিশদ আলোচনা করতে পারব। সবাইকে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
লেখকঃ অভিজিৎ বিশ্বাস, ফটোগ্রাফার ও ডিওপি, ওমান টিভি, ওমান।