সূর্যাস্তের আগের কিছু সময় ছবি তোলার জন্যে চমৎকার একটা সময়। এই সময় চারপাশ রঙ রূপে পরিপূর্ন থাকে। মনোরম প্রকৃতির ছবি থেকে শুরু করে অনেক কনসেপচুয়াল ছবি তোলা যায় এই সময়। সানসেট এর ছবি কমবেশি আমরা সবাই তুলি। কক্সবাজারে গিয়ে সূর্য হাতে নিয়ে ছবি তোলেনি এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। আমি এখানে চেষ্টা করব এই টাইপ ছবি কিভাবে আরও ভাল করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে। ধাপে ধাপে আলোচনা করব। আশা করি বুঝতে তেমন কোন সমস্যা হবে না।
১, সময়ঃ সিলুইট (Silhouette) তোলার জন্যে সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ন। চাইলে সারাদিনই কমবেশি সিলুইট (Silhouette) তোলা যায় কিন্তু সেরা সময় হচ্ছে সূর্যাস্তের আগের ৩০-৪৫ মিনিট। এই সময়টাতে সূর্যের নরম লালচে আভায় চমৎকার ছবি তোলা সম্ভব। আজকাল স্মার্টফোনের যুগ। প্রায় সবাই এখন স্মার্টফোন ইউস করে। স্মার্টফোনের জন্যে অনেক এপস আছে যেগুলো আপনাকে সূর্যাস্তের সঠিক সময় বলে দেবে। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তবে মাগরীবের আজানের সময়টা জেনে নিন। তাতেও আপনি সঠিক সময় পাবেন।
২, ক্যামেরা মূডঃ সূর্যাস্তের সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এর রঙের বাহার এক এক এক্সপোজারে এক এক রকম লাগে। আপনি যদি ক্যামেরার যেকোন অটো মুড বা এপারচার প্রায়রিটি মুডে ছবি তোলেন তবে আপনার ক্যামেরা ওভার এক্সপোজড ছবি দেবে। সবচেয়ে ভাল হয় শাটার প্রায়রিটি/এক্সপোজার প্রায়রিটি মুডে ছবি তুললে। আপনার ক্যামেরায় এটা Tv হিসেবে চিহ্নিত করা থাকবে। একই ছবি কয়েকটা এক্সপোজারে তুলুন। পরে দেখবেন এক একটা আলাদা রঙের বাহার ছড়াচ্ছে।
৩, ক্যামেরা সেটিংসঃ এক্সপোজারের কথা তো আগেই বললাম। এবার আসুন অন্যান্য সেটিংস গুলায়। যেহেতু সিলুইট (Silhouette) তোলার সময় শাটার স্পিড অনেক বেশি পাওয়া যায়, সেহেতু ISO ১০০ তেই রাখুন। এপারচার এর বেপারটা একটু পেচানো। আপনার যদি লম্বা ২০০মিমি+ একটা লেন্স থাকে এবং আপনি যদি বিশাল একটা গোল সূর্যের ছবি তুলতে চান, তবে এপারচার ৮-১২ এর মধ্যে রাখুন। এতে আপনি সূর্যের চারপাশে ভাল ফিনিশিং পাবেন। ল্যান্ডস্কেপ এর সিলুইট (Silhouette) তুলতে চাইলেও আমি বলবো সেইম এপারচার ব্যাবহার করুন। কিন্তু আপনি যদি সামনে কোন সাবজেক্ট রেখে তাকেই ছবির কেন্দ্রবিন্দু করতে চান, তবে আপনি এপারচার ৪-৫.৬ ব্যাবহার করতে পারেন। এবার বলছি সিলুইট (Silhouette) তোলার সবচেয়ে বড় কৌশল, ***হোয়াইট ব্যালেন্স। সিলুইট (Silhouette) তুলতে হোয়াইট ব্যালেন্স কখনোই অটো রাখবেন না। যেহেতু সূর্যাস্তের ছবি যত ওয়ার্ম হবে ততই সুন্দর হবে, সুতরাং হোয়াইট ব্যালেন্স ক্লাউডি বা শেড ব্যাবহার করুন। চমৎকার ওয়ার্ম টোন পাবেন। ছবি অতি কালারফুল হবে।
৪, খুটিনাটিঃ মূল বিষয়গুলো প্রায় সবই আলোচনা করে ফেলেছি। এবার কিছু খুটিনাটি। কোন সাবজেক্ট নিয়ে সিলুইট (Silhouette) তুলতে গেলে চেষ্টা করুন সাবজেক্টের পেছনে পূরোটাই আকাশ রাখতে। যদি গাছপালা বা দালানকোঠা থাকে, তবে আপনার সাবজেক্ট তার সাথে মিশে সব কাল হয়ে যাবে। চেষ্টা করুন উচু কোন স্থানে ছবি তুলতে। যেমন উচু রাস্তা, দালানের ছাদ, ফ্লাই ওভার ইত্যাদি। তাতে আপনি সাবজেক্টের পেছনে খোলা স্পেস পাবেন। ছবি তোলার সময় চারপাশ দেখুন। সূর্যাস্তের আগে চারিদিক বিচিত্র রূপ ধারন করে। এক এক এঙ্গেলে এক এক রকম ছবি পাবেন। এবার বাস্তবতার কথা বলি। অনেক ক্ষেত্রেই ভাল সিলুইট (Silhouette) পাবেন না। হয়ত আকাশ থাকবে মেঘলা। কিংবা থাকবে বৃষ্টি। আশাহত হলে হবে না। পরের দিন আবার বের হবেন। ভাল ছবি অবশ্যই পাবেন।
পরিশিষ্টঃ আমি চেষ্টা করব সিলুইট (Silhouette) ছবির পোস্ট প্রোসেস এর একটা ফটোশপ টিউটেরিয়াল পোস্ট করতে। এটাতে যদি আপনারা উপকৃত হন তবে জানাবেন। আমার চেয়ে অনেক জ্ঞানি ব্যাক্তিরা এখানে আছেন। যদি কিছু ভুল বলে থাকি বা বাদ দিয়ে থাকি নির্দিধায় সেটা জানালে অনেক খুশি হব।
হ্যাপি ক্লিকিং
চমৎকার। অনেক কিছুই জানলাম।
আর পোস্ট প্রসেসিং-এ নেক্সট টিউটরিয়ালটা কি লাইটরুমে দিলে ভাল হত! ফটোশপ ঝামেলার মনে হয় 🙁
রাকিব ভাই , ভাল লেগেছে লিখা টা , Silhouette আমার অনেক ভাল লাগে ।