আমি আগেই বলে নিচ্ছি আমি বিশেষজ্ঞ কেউ না, নেট থেকে ঘেঁটে ঘেঁটে মোটামুটি শিখেছি, এমনকি ক্যামেরা কেনার আগে আমি এটা কিভাবে অন করে সেটাও জানতাম না।এখন ও যে খুব জানি তা না। তাই আমি শুধু এখানে আমার একান্ত মতামত একান্ত উপলব্ধি ই সবার সঙ্গে শেয়ার করছি। হয়তো কারো না করো এতে কিছুটা উপকার হতে পারে।
প্রথম প্রথম যারা ক্যামেরা কিনেন তাদের প্রচণ্ড দোটানায় পরতে হয় ক্যানন না নিকন, এর পর কোন ক্যামেরা কিনবেন এই সব তবে এক্ষেত্রে বেশীরভাগ এই পসন্দ করে সাইজে একটু ছোট দামে একটু সস্তা এন্ট্রি লেভেল এর ক্যামেরা এর গুলো, কিন্তু আমি ব্যক্তিগত ভাবে এন্ট্রি লেভেল এর ক্যামেরা কেনার পক্ষে না। কেন সেই ব্যপার টা একটু ক্লিয়ার করি।যাদের ফটোগ্রাফি নিয়ে একটু সিরিয়াস আগ্রহ আছে তাদের প্রথমেই শুরু করা উচিত ক্যানন ৬০ডী অথবা নিকন ডি৯০ টাইপ ক্যামেরা দিয়ে, যেসব কামেরায় আপনি মোটামুটি ভাবে ক্যামেরা এর সব ব্যপার গুলো সম্পর্কে ধারনা পাবেন,এবং পরবর্তী সময়ে প্রফেশনাল ক্যামেরা গুলো অপারেট করা আপনার জন্য সহজ হবে। এখন বলি কোন কোন সমস্যা তে আপনি পরবেন এন্ট্রি লেভেল এর কামেরায়।
১। তুলনা মুলক ছোট ভিউ ফাইনাডার।
২। স্লো ফোকাস
৩। কেলভিন স্কেলে হোয়াইট ব্যলেন্স না করতে পারা
৪। আকারে ছোট
৫। উপরের দিকের ডিস্লপে এর অনুপস্থিতি
৬। ডায়াল বাটন কম থাকা
৭। ফোকাস মোটর বিহীন লেন্স ব্যাবহার না করতে পারা ( শুধু নিকন)
১। তুলনা মুলক ছোট ভিউ ফাইনাডার
ভালো ছবি তোলার পূর্বশর্ত হল ভালো করে দেখে নেওয়া ফ্রেম টা, শুধু সাবজেক্ট দেখে ক্লিক করলে কোন অপ্রাসঙ্গিক অবজেক্ট এর কারনে আপনার পুরো ছবিটাই নষ্ট হতে পারে, কিন্তু আপনার ক্যামেরা এর ভিউ ফাইন্ডার যখন ছোট হবে তখন আপনার এই কাজটা করা একটু কঠিন হয়ে যাবে, আর যদি শখ করে ও ম্যানুয়াল ফোকাস করার ইচ্ছা থাকে তবে তো আর কঠিন, যাদের চোখে চশমা আছে তাদের ও এই নিয়ে এক আধটু প্রব্লেম ফেস করতে হয়। যদি ও লাইভ ভিউ দিয়ে আপনি তা করতে পারেন তবে ভিডিও ছাড়া এটা মোটেই সুবিধা জনক কিছু না। আর কিছুদিন ব্যবহার করার পর ভিউ ফাইন্ডার এ টুকটাক স্পট ও পরে ওইটা তো আরও বিরক্তিকর।
২। স্লো ফোকাস
অটো ফোকাস করা তুলনামুলক সহজ এবং ভালো পধতি, অনেকই আপনাকে বলবে না ম্যানুয়াল কর, ম্যানুয়াল কর… কিন্তু আমি মনে করি ক্যল্কুলাটার থাকতে মুখে অঙ্ক করার কোন মানে হয় না। আর একটা পর্যায়ে চলে গেলে আপনি নিজেই ঠেকায় পরলে ম্যানুয়াল করবেন। তাই যা যন্ত্রে হয় তা চোখে করে সময় নষ্ট করার আমি কোন মানে দেখি না। দ্রুত ফোকাস করা ছবি তোলার একটি গুরুত্ব পূর্ণ অংশ কিন্তু অটো ফোকাস করতে গেলেই আপনাকে বেশ ভোগাবে এন্ট্রি লেভেল এর ক্যামেরা গুলোতে। বিশেষ করে একটু স্পীড থাকা কোন কিছু ফোকাস করা তো আরও কষ্ট। যদিও ম্যানুয়াল করা এক্ষেত্রে সুবিধা জনক। কিন্তু সেমি প্রো লেভেল এর কামেরায় আপনি কান্টিনিয়াস ফোকাস দিয়ে এই কাজটা তুলনামুলক সহজে করতে পারবেন।
৩। কেলভিন স্কেলে হোয়াইট ব্যলেন্স না করতে পারা
ইন ক্যামেরা ভালো কিছু করার ইচ্ছা সবার এই থাকে, একটা ছবির কালার কেমন আসবে তা অনেকটাই নির্ভর করে উপযুক্ত হোয়াইট ব্যলেন্স ঠিক করার মাধ্যমে। কিন্তু এন্ট্রি লেভেল এর ক্যামেরা গুলো তে আপনার এক্ষেত্রে বেশীরভাগ নির্ভর করতে হবে কামেরার ভেতরে ঠিক করে রাখা কত গুলো সেটিং আর অটো মুড এর উপর। যে কারনে ‘’ভালো কালার পাই না’’ এই কথা টা প্রায় এই শোনা যায় নতুন ছবি তুলতে শুরু করা মানুষের মুখে। কেলভিন স্কেল এমন একটি পদ্ধতি যাতে করে আপনি ক্যামেরা এর মস্তিষ্ক উপর নির্ভর না আপনার ইচ্ছে মত কালার এর ছবি পেতে পারেন।
আকারে ছোট ব্যাপারটা প্রথম প্রথম ভালো লাগলেও সময় বারার সঙ্গে বুঝবেন আপনার হাতে ক্যামেরা এর ফিল কেমন, এটা ছবি তোলার ক্ষেত্রে একটা অনেক বড় ব্যাপার, ব্যপারটা অনেকটা কলম ধরার মত, সব কলমেই লেখা হয় কিন্তু তার পর ও আমাদের সবার পসন্দের কিছু কলম থাকে, যে টা আমাদের হাতে বেশ কমফরট। এবং সেই কলম টায় আমাদের লেখা ও তুলনামুলক ভালো হয়। কামেরার ক্ষেত্রে হার্ড সলিট ফিল বেশীরভাগ ফটোগ্রাফার দের পসন্দ। এক্ষেত্রে একটা কথা বলে রাখা ভালো, অনেকে ভাবেন ব্যটারি গ্রিপ শুধু এক্সট্রা ব্যটারি এর কাজেই লাগে কিন্তু ব্যপারটা ঠিক তা না, হ্যান্ড গ্রিপ, ব্যলেন্স সব কিছুতেই এর ভূমিকা আছে, আপনি ভারটিকাল ছবি, গ্রিপ থাকলে অনেক ভালো তুলতে পারেবেন।
৫। উপরের দিকের ডিস্লপে এর অনুপস্থিতি
এই জিনিস টা যে কত কাজের আপনি কোন ভালো ফটোগ্রাফার এর ছবি তোলা দেখলেই বুঝবেন, যে উনি কত বার করে এই ডিসপ্লে এর দিকে তাকাচ্ছেন ছবি তোলার সময়, আপনার কামেরার যাবতীয় সেটিং আপনি এটা দেখেই খুব দ্রুত বদল করতে পারবেন এমন কি অন্ধকারে ও মেইন ডিস্প্লে অন না করে আপনি সম্পূর্ণ ক্যামেরা চালাতে পারবেন।
৬। ডায়াল বাটন কম থাকা
সাধারণত এন্ট্রি লেভেল এর ক্যামেরা গুলোতে একটি ডায়াল বাটন থাকে, যাতে করে খুব দ্রুত কোন সেটিং বদল করা আপনার পক্ষে কষ্টকর এবং কিছুটা অধিক সময় সাপেক্ষ হবে, এতে করে আপনার মিস হতে পারে চরম কোন মুহূর্ত
৭। ফোকাস মোটর বিহীন লেন্স ব্যাবহার না করতে পারা (শুধু নিকন)
ফোকাস মোটর না থাকার জন্য আপনি পুরনো মডেলের লেন্স গুলো যেগুলো তুলনামুলক সস্তা সেই গুলো ব্যাবহার( অটো ফোকাস) করতে পারবেন না। শুধু ৫০মি মি ১.৮ কিনতেই আপনার গুনতে হবে ১১হাজার টাকা বেশী। এর চেয়ে এই টাকাটা বডি কেনার সময় কাজে লাগানো ভালো।
তাই আমার মনে হয় যারা সিরিয়াস টাইপ অ্যামেচার অথবা প্রফেশনাল হবার ইচ্ছে আছে তারা প্রথমেই প্রাইম নিয়ে লাফালাফি না করে কিট হিসেবে ১৮-২০০ ল্যান্স নেওয়া সবচেয়ে ভালো। এক্ষেত্রে আমি দামের ব্যপারটা আমলে না নিয়ে শুধু শেখা টাকে প্রাধান্য দিয়ে বলছি। এই ল্যান্স এর সুবিধা হল আপনি মোটামুটি ব্যবহার করা সব ধরনের ফোকাল লেন্থ সম্পর্কে ধারনা নিতে পারবেন। এমন কি ল্যান্স না বদল করেই মোটামুটি ভালো লান্ডস্ক্যপ, পোর্টরেট এমন কি টুক টাক ওয়াইল্ড লাইফ ও করতে পারবেন, তার মানে দাঁড়ালো ফটোগ্রাফি এর মোটামুটি সব ধরনের সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে পারবেন, এতে করে আপনার পরবর্তীতে পসন্দমত ল্যান্স পসন্দ করা সহজ হবে। ফটোগ্রাফির ২য় ধাপে পৌঁছাতে আপনাকে অনেক সাহায্য করবে এটি।
good one bro…
Canon er 1100D cam ta ki beginner/entry level camera hishebe valo?
ভালো হবে। 🙂